বর্তমান ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সাথে সাথে এই সংশ্লিষ্ট চাকুরীও অনেক বাড়ছে। সেই সাথে ইন্টারনেটে ব্যবহৃত সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট এবং মোবাইলে ব্যবহৃত এপসগুলো বানানোর জন্য ডেভেলপারের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু প্রথমে কেউ এসব শিখতে গেলে বুঝে উঠতে পারে না তার কোনটা শিখা উচিত। তো সেই বিষয়ে ধারনা দেয়ার জন্য নিচের দুটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করলাম।
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যা আমরা ব্যবহার করি সেগুলোকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
১) ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন
২) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন
প্রথমে আমরা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কথা বলি। ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হলো ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করে আমরা যা কিছুই দেখি তার সবই প্রায় ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন বা ওয়েব সফটওয়্যার। আমরা যত রকম ওয়েবসাইট ব্রাউজ করি এগুলো সবই ওয়েবসাইট বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। যেমন: ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডিন, প্রথম-আলো, বিডি জবস, ইত্যাদি।
কম্পলিট ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্স
কোর্স আউটলাইনে যা যা পাচ্েন:
- ফুল কোর্স ৫-৬ মাসের কোর্স ও ১৩ টি এসাইনমেন্ট।
- ৮০+ আপডেটেড মডিউল।
- দিনে ৩ বেলা লাইভ সাপোর্ট সেশন
- কোর্স শেষে জবপ্লেসমেন্ট সাপোর্ট ও ইন্টারভিউ গাইডলাইন
প্রোগ্রামিং হিরো কোর্সের ডিটেইলস দেখতে ক্লিক কর
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?
একটি ওয়েবসাইটকে তৈরী করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে লাইভ করা পর্যন্ত যে সকল কাজ করতে হয় সেই সকল কাজকে একসঙ্গে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলা হয়।
ওয়েব ডেভেলপার তিন ক্যাটাগরি রয়েছে
১. ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপার — যারা ওয়েবের শুধু UI(User Interface) ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন করে, অর্থাৎ ওয়েবসাইট বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটা দেখতে কেমন হবে সেটা Front end Developer ডিজাইন করে। ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপার হতে হলে HTML, CSS, JavaScript, React এগুলো জানতে হয়।
২. ব্যাকএন্ড ডেভেলপার — যারা শুধু ওয়েবসাইটে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে তাকে সচল একটি অ্যাপ্লিকেশনে পরিনত করে এবং ওয়েবসাইটের ডাটাবেজ ও সার্ভারের উপর কাজ করে তাদেরকে Beckend Developer বলে। ব্যাকএন্ড ডেভেলপার হতে হলে কোনো একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জানতে হয়। যেমন: Javascript C#, PHP, Python, Ruby ইত্যাদি। সাথে একটি ডাটাবেজ ল্যাংগুয়েজ যেমন Mongodb or MySql শিখতে হয়।
৩. ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার — যারা ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপ দুটোই করতে পারে তাদেরকে Fullstack Developer বলে।
এছাড়াও এখন ওয়েবসাইট ডেভেলপ করার জন্য CMS (Content Management System) টেকনোলজি আছে যার মাধ্যমে কোন প্রোগ্রামিং না জেনেও ওয়েবসাইট ডেভেলপ করা যায়। যেমন: WordPress, Shopify, Joomla.
মোবাইল এপস ডেভেলপমেন্ট কি
মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট হলো স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, এবং অন্যান্য মোবাইল ডিভাইসের জন্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার প্রসেস। মোবাইল অ্যাপগুলি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন গেম, সোশ্যাল মিডিয়া, ই-কমার্স, এবং আরও অনেক কিছু।
মোবাইল এপের জনপ্রিয় কিছু অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছেঃ
অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট – Android Development
iOS (Apple)
Windows OS (Microsoft)
Symbian OS (Nokia)
তবে সবচেয়ে বেশি চলে গুগলের Android ও অ্যাপলের ডেভেলপ করা iOS। তাই একজন মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপারকে দুটো প্লাটফর্মের টেকনোলজি শিখতে হয়। Android এর জন্য যেমন Java/kotlin Programming language শিখতে হয় তেমনি iOS এর জন্য Swift শিখতে হয়। তবে এখন Flutter শিখেই সবগুলো প্লাটফর্মের জন্য অ্যাপস বানানো যায়।
ওয়েব ও এপস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করলে এপস শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড/আইওএস প্লাটফর্মের জন্য। আর ওয়েব application ইন্টারনেট ব্রাউজারে চলে এমন সব ডিভাইসের জন্য। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টও ওয়েব ডেভেলপমেন্টের অন্তর্গত। তাই এপস ডেভেলপমেন্ট এর কাজের পরিধি ছোট। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজের পরিধি বিশাল।
তবে সারা বিশ্বজুড়ে মোবাইলের ব্যবহার বৃদ্ধির কারনে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্টের কাজও বাড়ছে।
কোনটার চাহিদা বেশি?
সারা বিশ্বে এখন মোবইল কেন্দ্রিক অনেক বড় বড় বিজনেস গড়ে ওঠছে। যেমন: উবার, পাঠাও,ফুডপান্ডা ইত্যাদি। শুধুমাত্র মোবাইলের ১টি অ্যাপস দিয়েই হাজার হাজার কোটি টাকার বিসনেজ হচ্ছে সারা পৃথিবীতে। তাই এই সেক্টরের ডেভেলপারদের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অপরদিকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট পুরো ইন্টারনেট জুড়েই বিস্তারিত বলে এর চাহিদা ছিলো এবং এখনো আছে। আর যতদিন ইন্টারনেট থাকবে ততদিন সফটওয়্যার এর চাহিদাও থাকবে।
ফোবর্স ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ৮.৯ মিলিয়ন (৮০ লক্ষ ৯০ হাজার) মোবাইল অ্যাপস আছে। যার প্রায় ৪০% (চল্লিশ শতাংশ) চিনের দখলে। আর চিনের বাজারে চিনা ডেভেলপাররাই বেশি কাজ করে থাক। আর সারা বিশ্বে মোবাইল ডেভেলপার আছে ১২ মিলিয়ন (১ কোটি ২০ লক্ষ) এর মত।
অপরদিকে সারাবিশ্বে প্রায় ২৭ মিলিয়ন (২ কোটি ৭০ লক্ষ) ওয়েব ডেভেলপার আছে। আর তার বিপরীতে ওয়েবসাইট রয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন । এতে করেই বোঝা যায় এই সেক্টর কতটা বড় আর এর চাহিদাও কত ব্যাপক। অ্যাপ ডেভেলপারদের চাইতে ওয়েব ডেভেলপারদের চাহিদা এখনো অনেক বেশি। ওয়েব ডেভেলপারদের সংখ্যাও অ্যাপ ডেভেলপারদের চেয়ে বেশি।
আগ্রহ এবং চাহিদা বিবেচনা করে, যেকোনো ক্ষেত্রটি বেছে নিতে পারো যেটা তোমার পছন্দের। যদি তুমি নিশ্চিত না হও যে কোন ক্ষেত্রটি তোমার জন্য সঠিক, তাহলে আপনি দুইটা সম্পর্কে ্তাহলে আরও জানতে পারো।
লিখেছেন আমাদের কন্টেস্ট রাইটিং এর প্রতিযোগী @Mahedi Hasan